নবম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে উঠলো অভিযোগ, অস্বীকার শিক্ষকের, তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ
শীতল চক্রবর্ত্তী ,বুনিয়াদপুর, ৩০ জুন, দক্ষিণ দিনাজপুর:————-
নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মৃত ছাত্রীর পরিবারের লোকজনেরা
স্কুল শিক্ষককেই তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করলেন।ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে।যদিও বংশীহার হাইস্কুলের অভিযুক্ত শিক্ষক জীবন ঘোষ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ।মৃতদেহ উদ্ধার করে পুরো ময়না তদন্তে পাঠিয়ে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়েছে।
পুলিশি সূত্রে খবর, মৃত ওই নমব শ্রেণীর ছাত্রীর নাম দেবস্মিতা সরকার(১৪), বাবা গোপাল চন্দ্র সরকার।তার বাড়ি বংশীহারী থানার বুনিয়াদপুর স্টেশন সংলগ্ন হাটপুকুর এলাকায়। সে এবছর বংশেরী হাই স্কুলে নবম শ্রেণী ছাত্রী ছিলেন। বুধবার ছিল দেবস্মিতা সরকারের বংশীহারী স্কুলে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা ছিল। সেই ঘরে সেদিন পরীক্ষা নেবার দায়িত্ব ছিলেন স্কুলের জীবন বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক জীবন ঘোষ।পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে দেবস্মিতা সরকারের পরীক্ষার খাতা জোর করে কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ দেবস্মিতার পরিবারের লোকজনদের। বহুবার কাকুতি মিনতি করেও মেলেনি সেই পরীক্ষার খাতা বলে দাবি তার পরিবারের লোকজনদের। ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজনদের আরও অভিযোগ ,নির্দিষ্ট সময়ের আগে কেন তার পরীক্ষার খাতা সেই ঘরের কর্মরত অভিযুক্ত শিক্ষক জীবন ঘোষ নিয়ে নিয়েছিলেন। অভিযুক্ত শিক্ষক জীবন ঘোষের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন মৃত ছাত্রীর পরিবারের লোকজনেরা।
যদিও বংশীহারী থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এবিষয়ে মৃত ছাত্রীর বাবা গোপাল চন্দ্র সরকার ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জানিয়েছেন,আমি নিজেও একজন স্কুল শিক্ষক।স্কুলে থাকাকালীন মেয়ে আমাকে ফোন করেছিল প্রচুর কান্না করছিল, আর বলছিল জীবন বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক জীবন ঘোষ নাকি তার খাতা পরীক্ষার শেষের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নিয়ে নিয়েছে। আমার মেয়ে গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস লাগিয়েছে।ওই শিক্ষকের জন্য আমার মেয়ে আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। আমি ওই শিক্ষকের কঠোর শাস্তির দাবি জানায়।
এবিষয়ে মৃতের এক এলাকাবাসী শিউলি সরকার জানিয়েছেন, আমার মেয়ে ও দেবস্মিতা একই ক্লাসে পড়ে। দুজনেই আমার সাথেই স্কুলে গিয়েছিল। পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে তাদের ক্লাস রুম থেকে চিৎকার শুনতে পেয়ে আমি উপরে যাই। দেবস্মিতা প্রচুর কান্না করছিল। আর বলছিল আন্টি আমার খাতা জীবন স্যার নিয়ে নিয়েছে। কোন কিছু খাচ্ছিল না শুধু কান্না করছিল।তাছাড়া আমরা অনেকবার দেখেছি বংশীহারী স্কুলের এই শিক্ষক জীবন ঘোষ বহুবার এরকম কাজ করেছেন।আর যার ফলে প্রাণ হারিয়েছেন ছোট ছোট ফুটফুটে ছাত্রছাত্রীরা।আমরা অভিযুক্ত শিক্ষক জীবন ঘোষের কঠোর শাস্তির দাবি জানায়।
সূত্রে জানা গিয়েছে ,ওই অভিযুক্ত শিক্ষক আগেও অনেক বার এরকম করেছে ছাত্রীদের সঙ্গে বলে অভিযোগ শুনেছি। তিনি নাকি তার পরিচিত ছাত্র-ছাত্রীদের নম্বর বাড়িয়ে দেন। এলাকাবাসীরা চাই আমার মেয়ের মত আর যেন কারো মেয়ে মায়ের কোল খালি করে না চলে যায়। আমাদের একটাই দাবি জীবন ঘোষ এর শাস্তি চাই।
যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক জীবন ঘোষ তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, কে কি অভিযোগ করল আমার ওটা দেখার দরকার নেই। আমি সঠিক সময়েই খাতা নিয়েছি।
ইতিমধ্যেই শিক্ষিকার পরিবারের তরফে বংশীহারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার চিন্তাভাবনা করা হয়েছে বলে মৃতের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে।
বংশীহারী থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এখন দেখার এটাই প্রশাসন কবে জীবন ঘোষের মতো শিক্ষকদের উচিত শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা করবে, নাকি দেবস্মিতা সরকারের মত এরকম আরো বহু ফুটফুটে প্রাণ অকালেই হারাবে। সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে দেবস্মিতা সরকারের মতো আরো বহু অভিভাবকেরা।
এমন ঘটনায় মৃতের পরিবার সহ শোকের ছায়া নেমে এসেছে।