পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৭ ডিসেম্বর— ‘ আমরা বিজেপিকে আমন্ত্রন জানানোর মতো মানসিকতা তৈরী করতে পারিনি। এমনি ওদের ঘৃণিত মুখ’— ২৬ তম দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদদের আমন্ত্রন বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। সোমবার বালুরঘাট হাইস্কুল ময়দানে অনুষ্ঠিত এই বইমেলাকে ঘিরে সকাল থেকেই বিতর্কের ঝড় তোলে বালুরঘাট শহর মন্ডল বিজেপি। বিজেপির ৩ বিধায়ক ও সাংসদকে কেন এই বইমেলার আমন্ত্রণ পত্র দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে জেলা শাসককে লিখিত অভিযোগও করেন তাঁরা। যে বিতর্কের উত্তর এদিন বইমেলা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। তাঁর কথায়, ‘ বাংলায় বিজেপি নেই। জোর করে পিরিত করছে। এভাবে পিরিত বেশিদিন টেকে না।আমরা বিজেপিকে আমন্ত্রন জানানোর মতো মানসিকতা তৈরী করতে পারিনি। এমনি ওদের ঘৃণিত মুখ’। রাজ্যের কৃষিবিপণন মন্ত্রী তথা হরিরামপুরের বিধায়ক বিপ্লব মিত্রকে সঙ্গে নিয়ে এভাবেই জোরালো ভাবে আক্রমন করতে দেখা যায় বিজেপিকে। যা নিয়েই রীতিমতো সরগরম এখন দক্ষিণ দিনাজপুর।
‘মোদের গরব মোদের আশা, আমরি বাংলা ভাষা’ — এই স্লোগানকে সামনে রেখে সোমবার থেকে শুরু হয় ২৬ তম দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বইমেলা। বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে প্রদীপ প্রজ্জ্বোলনের মাধ্যমে বইমেলার উদ্বোধন করলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী জনাব সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কৃষি বিপনণ মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র, জেলা শাসক আয়েশা রাণী এ, পুলিশ সুপার রাহুল দে, জেলা গ্রন্থাগারিক দেবব্রত দাস সহ জেলার একাধিক বিধায়ক ও আধিকারিকরা। এবারের বই মেলায় কলকাতা ও জেলার মোট ৬৮ টি স্টল রয়েছে। প্রতিদিন দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত চলবে এই বইমেলা। মেলা প্রাঙ্গনে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনা করা হয়েছে। মেলা চলবে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবারের জেলা বইমেলার থিম কবি অতুলপ্রসাদ। বইমেলার উদ্বোধন করে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি বলেন, বর্তমানে এ রাজ্যে প্রায় ১৫০ গ্রন্থাগার রয়েছে। যার অনেকগুলিতে অবিলম্বে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ করা হবে। এজন্য গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন মিলেছিল। পরে অর্থকমিটিতেও তার অনুমোদন মেলে। শিঘ্রই গ্রন্থাগারিক ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে তিনি জানান। এছাড়াও চাকরিরত অবস্থায় সেসব কর্মীরা মারা গিয়েছেন তাদের বেশিরভাগ পরিবারকেই চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। জেলা শাসক আয়েশা রাণী এ বই মেলায় আসা প্রত্যেককে একটি করে বই কিনে তা অন্যদের উপহার দেবার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র জানিয়েছেন, বই এর গুরুত্ব বোঝাতেই সরকারের এ ধরনের মেলার উদ্যোগ।
এদিন এই বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিক দের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে পাশে নিয়ে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করতে দেখা যায় গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী কে। জবাব দিয়েছেন বিজেপি বিধায়কদের আমন্ত্রণ বিতর্ক নিয়েও। যা নিয়েই এখন জোর শোরগোল শুরু হয়েছে পুরো দক্ষিন দিনাজপুরে।