গঙ্গারামপুরের উত্তর নারায়ণপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিপ্লব ও গৌতমের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়ের, দু’পক্ষের গ্রেপ্তার ৮, মৃতদেহ করা হলো সৎকার্যও।

0
1240

                                   শীতল চক্রবর্তী গঙ্গারামপুর,২০ জানুয়ারি দক্ষিণ দিনাজপুর:-উত্তর নারায়ণপুরের ঘটনায় পৃথক পৃথকভাবে তিনটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে থানায়। পুলিশ অবশ্য দুটি ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে। মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার (৩)২ বেলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর নারায়ণপুরে তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিপ্লব ও জেলা সভাপতি গৌতম দাসের লোকজনের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়ে ছিল রাজ্য রাজনীতি।পুলিশের তরফে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরে যেমন মৃত বিপ্লব ঘনিষ্ঠ কালিপদ সরকার সহ ২২ জনের নামে খুন সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে ৩ মহিলা সহ ৭ জনকে মহকুমা আদালতে পাঠিয়েছে। ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত কালিপদ সরকার ঘনিষ্ঠ সুমনের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সুমনের পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গৌতম ঘনিষ্ঠ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মৃত সঞ্জিতের দেহ শেষ শ্রদ্ধা জানালো তৃণমূল কংগ্রেস-করা হলো সৎকার্যও। এদিনও পুলিশের তরফে কড়া নজরদারির মধ্যে এলাকা ছিল শান্ত।

পুলিশ জানিয়েছে, খুনের ঘটনায় ধৃতরা হলেন, অলক দাস, অনিল চন্দ্র দাস, পারুল রায়, রিতা সরকার, দিলীপ দাস, ভক্তি রায়, হরেন সরকার। তাদের বাড়ি গঙ্গারামপুর থানার উত্তর নারায়ণপুরে। ও সুমনের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তের নাম পরেশ রায়, তার বাড়ি উত্তর নারায়ণপুরে।                         

      সূত্রে জানা গিয়েছে খুনের ঘটনায় ধৃত মহিলাসহ ৭ জন তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ মৃত কালিপদ সরকার ঘনিষ্ঠ বলেই খবর। অপরদিকে এলাকার দুলু রায় গৌতম ঘনিষ্ঠ, পরেশ রায়। ঘটনায় এলাকায় পুলিশ পিকেটের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রামীণ, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, থানার আইসি সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী টহল দিচ্ছে।          

                       মঙ্গলবার সকালে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে গঙ্গারামপুরের নারায়ণপুর পার্টি অফিসের সামনেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দাস ঘনিষ্ঠ সঞ্জীত সরকার (৩১) বছর। তার বাড়ি গঙ্গারামপুর থানার নারায়ণপুরে। অন্যদিকে এই খুনের ঘটনার পরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই গুরুতর আহত হয়ে গঙ্গারামপুর মহাকুমা হাসপাতালে তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নারায়নপুর এলাকার বাসিন্দা কালিপদ সরকারকে নিয়ে আসা হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। নারায়ণপুরে বহুদিন ধরেই তৃণমূলের দলীয় একটি পার্টি অফিস দখল করাকে কেন্দ্র করে কালিপদর সরকার ঘনিষ্ঠ সুমন দাসের সঙ্গে গৌতম ঘনিষ্ঠ দুলু রায়ের মধ্যে গোলমাল বহু পুরনো।                                       

  পুলিশি সূত্রের খবর, বুধবার সকালে মৃত সঞ্জিত সরকারের মা কৈকিয়ী সরকার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যে,মৃত কালিপদর সরকার, তার ভাইদের নামের পাশাপাশি ২২ জনের নামে তার ছেলেকে একসঙ্গে জড়ো হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে খুন করেছে বলে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।            

   এর পাশাপাশি সঞ্জীত সরকার খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সুমন দাসের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সুমন রায় পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরে পরেশ রায় নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।                   

                       সেই সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়া গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জিত সরকারের খুনের ঘটনায় ঘটনাস্থলের ভিডিও ছবি ভাইরালের পরে নিজেদের পিঠ বাঁচানোর জন্য তার বাড়ির সামনে লোকজন জড়ো হয়ে গোলমাল পাকিয়েছে বলেই কালিপদ সরকারের মৃত্যু হয়েছে। কালিপদ সরকারের স্ত্রী সে বিষয়ে থানায় সেই ঘটনার জন্য তার স্বামী অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ সেই ঘটনায় পাত্তা দিতে নারাজ।    

    গঙ্গারামপুর থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুমার কুন্ডু জানিয়েছেন, পৃথক দুটি ঘটনায় পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করে বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে অনিল চন্দ্র দাসের কাছ থেকে খুনের কাজে ব্যবহার করা আগ্নেয়াস্ত্রসহ চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুমন দাস পলাতক রয়েছে। তার বাড়ির মধ্যে থেকে চারটি তাজা বোমাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে সুমন দাসের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশি টহল রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here