শীতল চক্রবর্তী গঙ্গারামপুর, ৭ ই জানুয়ারি, দক্ষিণ দিনাজপুর:-ওদের নাম বলে কথা বলার বুকের পাটা নেই। কারণ ভাইপো বললে তো আর মামলা করা যাবে না। আমি তো ওদের নাম করে আবারো বলছি, আর আবারও নাম ধরে বলছি কৈলাস বিজয়বর্গীয় বহিরাগত, তার ছেলে আকাশ বিজয়বর্গীয় গুন্ডা, আমি নাম করে বলছি দিলীপ ঘোষ গুন্ডা, অমিত শাহ বহিরাগত। তোমাদের বুকের পাটা থাকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করো, জেলে ঢোকাও, তখন দেখা যাবে কে সত্যি কথা বলছে আর কে মিথ্যা কথা বলছে তখন প্রমাণ হয়ে যাবে। এইভাবেই দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের স্টেডিয়াম মাঠে জনসভা করতে এসে এই ভাষাতেই বিজেপি নেতাদের কটাক্ষ করেন যুব তৃনমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিড়ে ঠাসা কর্মীসভায় বিজেপিকে বাংলা ছাড়ার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তৃতীয়বারের জন্য নবান্নে হাওয়াই চটি আসবে বলে জোরদার প্রচার করেন তিনি।
গত ৪ তারিখ থেকে জন্য উত্তরবঙ্গের সফরে আসেন। গত কাল পরশু তিনি শিলিগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে কর্মীসভা ও সাংগঠনিক সভা করে তিনি দুপুরেই বুনিয়াদপুর সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছান। দুপুর একটায় সভা করার কথা থাকলেও সড়কপথে বিকেল পোনে তিনটে নাগাদ গঙ্গারামপুরের স্টেডিয়ামে সভা করতে আসেন। প্রায় ২৪ মিনিটের বক্তব্যে ভিড়ে ঠাসা কর্মীসভায় দিল্লি থেকে আসা বহিরাগত বিজেপি নেতাদের বাংলা থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার কথা বলেন তিনি।
জনসভা থেকে সাংসদ তথা যুব তৃনমূলের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে মানেন না, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে মানেন না, তারাই দিল্লি থেকে এসে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। দিদির কাছে যে যা চাইছে সব করে দিচ্ছে। দুয়ারের সরকার এসেছে, আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এমন তাদের ভাব যেন কালকেই বিজেপি ক্ষমতায় আসছে। আর তখন যদি আপনাদের একটি রাস্তার দরকার হয় তাহলে তারা বলবে আগের দিল্লি থেকে মধু বাবুকে জিজ্ঞাসা করে আসি রাস্তাটা করবো কি, দিল্লি পরিচালনা করবে, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, গঙ্গারামপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, নদীয়াকে, আর সারাবাংলা কে চালাবে দিল্লি থেকে নেতা এসে এটা আপনারা হতে দেবেন কি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরো জানান, কৈলাস বিজয়বর্গীয় বহিরাগত, তার ছেলে আকাশ বিজয়বর্গীয় গুন্ডা, আমি নাম করে বলছি দিলীপ ঘোষ গুন্ডা, অমিত সাহা বহিরাগত। করে বলছি বিজেপির দিল্লির নেতারা বহিরাগত।
তোমাদের বুকের পাটা থাকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করো, জেলে ঢোকাব তখন দেখা যাবে কে সত্যি কথা বলছে আর কে মিথ্যা কথা বলছে, তখনই প্রমাণ হয়ে যাবে। তিনি বলেন হিম্মত থাকলে দিল্লি সরকার সাত বছরের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করুক। আমরা যদি তাদের উন্নয়নে নিরিখে হারাতে না পারে তাহলে রাজনীতি করায় ছেড়ে দেবো। বিজেপির সময়ে 2016 সালে নোট বন্দিতে মানুষজনকে লাইনে দাঁড় করিয়েছে। আর মমতা ব্যানার্জি মানুষজনকে লাইনে দাঁড় করিয়ে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড দিয়ে জীবন বাঁচায়। এই হল মমতা ব্যানার্জির সরকার। তিনি মমতা ব্যানার্জির নাম করে বলেন, আমরা ক্ষমতালিপ্স নন। বরং তিনি যে একাধিকবার মন্ত্রিত্বের ক্ষমতা ছেড়ে এসেছেন এদিন তিনি তাও বলতে ছাড়েননি। তিনি বলেন আমি নাকি তোলাবাজ, আপনারা কাকে টিভির পর্দায় তলা মুড়িয়ে টাকা নিতে দেখেছেন। জনতার উত্তর আসে শুভেন্দু। এরপরে শুভেন্দু কে নিশানা করে অভিষেক অভিযোগ করে বলেন, যারা মেরুদন্ড বিক্রি করে দিয়ে দিল্লির হাতে সব তুলে দিতে চাইছে তারা আসলে সবকিছু আরো বেশি করে চুরি করার জন্য এসব কিছু করছে।
সভাতে তিনি বলেন,পদ্মফুল শুকিয়ে গেলে মানুষ তাঁকে জলে ফেলে দেয়। আর ঘাস যত কাটবে ঘাস তত বাড়বে। তাই ইডি, সিবিআই দিয়ে তৃণমূলকে দমন করে রাখতে পারা যায় না। তৃতীয়বারের জন্য মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে কালীঘাটের হাওয়াই চটি পড়া মমতা ব্যানার্জি আবার ক্ষমতায় আসবে।
সভাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও, জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দাস, প্রবীণ তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্র, মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা, যুব তৃনমূলের জেলা সভাপতি অমরেশ সরকার, জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস সহ একাধিক তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন সভাতে ভিড় হয়েছিল ব্যাপক।