পুজোর বাড়তি আনন্দ দিতে মাইকের ব্যাবহার আদৌ পুজো কমিটিগুলো রাখবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রায়গঞ্জের মাইক ব্যাবসায়ীরা।

0
691

রায়গঞ্জ:-আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা পেঁজা তুলো মেঘ। আপন মনে সাদা কাশফুল মাথা দোলাচ্ছে।ভোরের বেলা শিশির ভেজা শিউলি ফুল জানান দিচ্ছে শরৎ এসেছে। মায়ের আগমনী সুর দিকে দিকে। পুজো পুজো গন্ধ এলেও করোনার আবহে পূজোর সেই গন্ধ এবার আসছেনা। নীল আকাশের বুকে সাদা পেঁজা তুলোর মেঘ খুশীতে ভেসে বেড়ালেও এবার পুজোয় মন ভার আনন্দের অন্যতম প্রধান উপকরন সাউন্ড সিস্টেম ও মাইক ব্যাবসায়ীদের। নমো নমো করে পূজো কমিটিগুলো মায়ের আরাধনা সারলেও উৎসবে মেতে ওঠার মাইকে বা সাউন্ড সিস্টেমে গান কি এবার আদৌ বাজবে মন্ডপে মন্ডপে! সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে মাইক ব্যাবসায়ীদের মাথায়। কেননা এখনও পর্যন্ত কোনও পুজো কমিটিই সাউন্ড সিস্টেম বা মাইক বাজানোর জন্য অর্ডার দিয়ে যায়নি। বুক করেও যায়নি তাদের কতগুলো মাইক বা সাউন্ডবক্স লাগবে পূজো মন্ডপে। সব পূজো কমিটিই কাটছাঁট করেছে তাদের বাজেটে। সেই বাজেট কাটছাঁটে কোপ পরতে পারে মন্ডপে মাইকের ব্যাবহারেও। এই আশঙ্কাতেই রয়েছেন উত্তরবঙ্গের অন্যতম সেরা রায়গঞ্জ শহরের মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম ব্যাবসায়ীরা।

পূজোতে প্রতিটি পূজো মন্ডপে প্যান্ডেল থিম ও আলোকসজ্জা যেমন মানুষের নজর কাড়ে তেমনি ” সাউন্ড সিস্টেমও পূজোতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মাইক ও সাউন্ডবক্স ছাড়া পূজো যেন বেমানান। পূজোতে প্রানের সঞ্চার করে এই মাইক ও সাউন্ডবক্স। পূজোর মাত্র আর কয়েকটা দিন বাকি। কিন্তু এবছর করোনার কারনে সবকিছু যেন থেমে রয়েছে। রায়গঞ্জের বিগ বাজেটের পূজো থেকে ছোট পূজো কমিটিগুলো এবার পূজো সারছেন একেবারে নমো নমো করেই। ফলে পুজোর বাড়তি আনন্দ দিতে মাইকের ব্যাবহার আদৌ পুজো কমিটিগুলো রাখবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রায়গঞ্জের মাইক ব্যাবসায়ীরা। কেননা হাতে গোনা আর মাত্র কটা বাকি বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দূর্গাপুজার। এখনও পর্যন্ত কোনও পুজো কমিটির কাছ থেকে অগ্রিম বুকিং বা অর্ডার পাননি রায়গঞ্জের মাইক ব্যাবসায়ীরা। এমনিতেই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে চলা লকডাউনে সমস্ত সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে রাজনৈতিক সভা মিটিং বন্ধ হয়ে পড়েছিল। কাজ হারিয়েছিলেন মাইক ব্যাবসায়ীরা। তাদের গুদাম ঘরে মাইক ও সাউন্ড সিস্টেমগুলোর উপর জমে গিয়েছে মাকড়শার জাল। রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন মাইক ব্যাবসায়ীরা। আশায় ছিলেন দূর্গাপুজার মরশুমে মন্ডপে মন্ডপে মাইক বাজিয়ে কিছুটা রোজগার হবে। কিন্তু করোনার কারনে পুজো কমিটিগুলি কাটছাঁট করেছে তাদের বাজেটে। সেই কাটছাঁট বাজেটে যদি মাইক ভাড়া পড়ে যায় তাহলে তাদের সমূহ বিপদ। একনও পুজো কমিটিগুলো অগ্রিম অর্ডার না করায় আশঙ্কায় দিন গুনছেন তাঁরা। রায়গঞ্জের এক পুজো কমিটির কর্মকর্তা জানালেন করোনার কারনে তারা এবার চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন তাই এবারের পূজোতে মাইকের ব্যাবহার একেবারেই না করার মতো করা হবে। অনেকেই জানাচ্ছেন এই দুঃসময়ে মাইক বাজিয়ে আনন্দ উৎসব করার মতো পরিস্থিতি এবার নেই। প্রতিবার পূজোর সকালে পাড়ার পুজো মন্ডপের মাইকের গান শুনে ঘুম ভাঙার রেওয়াজটা বোধহয় এবার থমকে যেতে চলেছে। পাড়ার পুজো মন্ডপের মাইকে এবার হয়তো আর শোনা যাবেনা কিশোর আশা, লতা, কুমার শানু কিংবা অরিজিৎ সিং বা শ্রেয়া ঘোষালের মিষ্টি মধুর পূজোর গান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here