পিন্টু কুন্ডু , বালুরঘাট, ১৮সেপ্টেম্বর— গভীর রাতে ৩০টি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মঘাতী হলেন বালুরঘাট সদর ট্রাফিক ওসি। বৃহস্পতিবার রাতে বালুরঘাটের চকভবানী এলাকার পুলিশ আবাসনেই আত্মঘাতী হন ওই সাব ইন্সপেক্টর। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই পুলিশ অফিসারের নাম সুদীপ্ত দাস (৪৯)। এই ঘটনা নিয়ে পরকীয়া সম্পর্ককেই দায়ী করেছেন মৃতের পরিবার। নিজের স্ত্রী সন্তানকে ডিভোর্স দিয়ে সামাজিক মর্যাদা আদায়ে স্বামীর উপর চাপ সৃষ্টি করছিল কুমারগঞ্জের এক মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার, অভিযোগ মৃতর স্ত্রীর। আর যার কারনেই এমন আত্মহত্যা বলেও মনে করছেন তারা।
যদিও জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, এব্যাপারে তিনি কোনো লিখিত অভিযোগ এখনো পাননি, । তাছাড়াও দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক বলেও দাবি করেছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, স্থায়ী বাড়ি মালদায়। 1997 সালে তিনি পুলিশের চাকরি পান । 1999 সালে তিনি বিয়ে করেন। তাঁর স্ত্রী সোমা দাস মালদা জেলার বাসিন্দা । কর্মসূত্রে স্ত্রী সহ এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বালুরঘাটে থাকতেন সাব ইন্সপেক্টর সুদীপ্ত দাস। কর্মসূত্রে প্রথমে হরিরামপুর থানার ওসি ,গঙ্গারামপুর থানার বড় বাবু , গঙ্গারামপুরে ট্রাফিক ওসি,তপন থানার ওসি , পরে কুমারগঞ্জ থানায় ওসি এবং শেষে বালুরঘাটে পোষ্টিং হয়েছিল তার।২০০৬সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত ছিলেন। ভালো অফিসার হিসাবে পরিচিত ছিলেন সকলের কাছে । সূত্রের খবর কুমারগঞ্জ থাকাকালীন ২০১৮ সালে সেই থানায় কর্মরত এক মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ারের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শারীরিক সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল তাদের বলে অভিযোগ ওই পুলিশ অফিসারের পরিবারের। আর যাকে হাতিয়ার করেই ওই মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার ট্রাফিক ওসির ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছিল বলে অভিযোগ। নিজের স্ত্রী সন্তানকে ডিভোর্স দিয়ে তাকে সামাজিক মর্যাদা দেওয়া হোক এই বলেও চাপ দিচ্ছিল ওই মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয় এমন ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে ট্রাফিক ওসির কাছ থেকে কয়েক লক্ষাধিক টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি বলেও অভিযোগ তার পরিবারের। বৃহস্পতিবার রাতেও ওই একই ঘটনা নিয়ে ফোনে কথা হচ্ছিল এবং স্বামীর উপর চাপ বাড়াচ্ছিলেন ওই মহিলা বলেও অভিযোগ তার পরিবারের। যার পরেই একসাথে ৩০ টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেন ট্রাফিক ওসি সুদীপ্ত দাস। গভীর রাতে পরিবারের সদস্যরা এমন ঘটনা জানতে পেরে তড়িঘড়ি পুলিশি সাহায্যে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। শুক্রবার সকালে ট্রাফিক ওসির মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সরগরম হলেও, ঘটনা না জানতে পেরে ওসির মোবাইলে ক্রমাগত ম্যাসেজ চালিয়েই গিয়েছেন ওই মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার। যেসবের বেশ কিছু তথ্য পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ট্রাফিক ওসির পরিবার বলে সুত্রের খবর।
মৃতের স্ত্রী সোমা দাস জানিয়েছেন, অবৈধ সম্পর্ককে হাতিয়ার করে সামাজিক মর্যাদা আদায়ের দাবিতে তার স্বামীর উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল ওই মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার। আর যার কারণে মৃত্যু হয়েছে তার স্বামীর। ঘটনা নিয়ে ওই মহিলার বিরুদ্ধে তিনি থানায় অভিযোগ করবেন যথা সময়ে বলে জানিয়েছেন ।
মৃতের দাদা জয়ন্ত কুমার দাস জানিয়েছেন, তিনি আলাদা থাকলেও বেশ কিছুদিন ধরে এক মহিলার সাথে ভায়ের অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে পারিবারিক অশান্তির খবর পাচ্ছিলেন তিনি।ওর মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের কঠোর শাস্তি চান তারা।